নিউরোডিজেনেরেটিভ ডিসঅর্ডার FXTAS-ও হয়তো এবার সারিয়ে তুলবে কালো-গোলমরিচ, জানালেন ইন্দোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল গবেষক
নিউক্র্যাড হেলথ বাংলার নিজস্ব প্রতিবেদন
ইন্দোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকেরা জানতে পেরেছেন যে কালো মরিচের মধ্য “পিপেরিন – নামক একটি প্রাকৃতিক ক্ষারীয় পদার্থ উপস্থিত থাকে, যা নিউরোডিজেনেরেটিভ ডিসঅর্ডার, ফ্র্যাগাইল এক্স-অ্যাসোসিয়েটেড ট্রিমোর / এ্যাটাকিয়া সিন্ড্রোম (FXTAS) এর বিরুদ্ধে থেরাপিউটিক এজেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ব্যাধি থেকে প্রোগ্রেসিভ সেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া, অ্যাক্শন ট্রিমর , পারকিনফনিজম নানান ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। ফ্র্যাজাইল-এক্স মেন্টাল রিটার্ডেট ১ (FMR1) নামে একটি জিনে মিউটেশনের ফলে এই ব্যাধি সৃষ্ট হয়। FMR1 জিনের মিউটেশনের ফলে জিনের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে পুনরাবৃত্তিমূলক RNA-এর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, আর তাতেই শুরু সমস্যার।
FXTAS রোগীদের মধ্যে, পুনরাবৃত্তি RNA-এর সংখ্যা ২০০ পর্যন্ত হতে পারে, যেখানে স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র ৫০। অতিরিক্ত পুনরাবৃত্তিমূলক RNA-এর উপস্থিতির ফলে করে নিউরোনাল কোষে সাইটোটক্সিসিটি সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা এর আগেও অনেকবার রাসায়নিক অণুর দিয়ে ট্রিট করে এই জিন মিউটেশন সংশোধন করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ক্ষেত্রেই সফলতা আসেনি।
ইন্দোরে IIT-এর গবেষক দলটি তাদের গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে দেখেছেন যে পিপেরিন নামক রাসায়নিকটি পুনরাবৃত্তিমূলক RNA-এর সাথে মিথস্ক্রিয়া করে এবং নিউরোনাল কোষে সাইটোটক্সিসিটি হ্রাস করে।
এই গল্পের প্রধান ডাঃ অমিত কুমার জানালেন; “আমরা পিপেরিনকেই বেছে নিয়েছিলাম কারণ এর ক্যানসার প্রতিরোধী, যকৃতকে সুরক্ষা দানকারী, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, নেফ্রন-রক্ষাকারী, এন্টি-ইনফ্ল্যামারেটারি, এন্টি-অ্যাপোপটোটিক, অ্যান্টি-ডিপ্রেশনট এবং নিউরোপ্রোটেক্টিভ জাতীয় নানান গুনাগুন আছে বলে খ্যাত। আমাদের গবেষনাতে পিপেরিন নামক রাসায়নিকটি পুনরাবৃত্তিমূলক RNA-এর প্রতি সিলেক্টিভিটি’ – তথ্যটি উঠে এসেছে।”
এই গবেষণায়টি করার সময় গবেষকরা FXTAS-তে আক্রান্ত রোগীদের দুটি ভিন্ন সেল-লাইন থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। এই সেল লাইনদুটিটেই পুনরাবৃত্তিমূলক RNA-এর উপস্থিতি এবং FXTAS-এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশকারী ছিল।
CSIR-ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি-র ডঃ কৃষ্ণান্দ চট্টোপাধ্যায় বলেনন, “CGC-এর পুনরাবৃত্তি রোধে জন্য এই যে থেরাপিউটিক সমাধানের খোঁজ পাওয়া গেছে,তা FXTAS সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। পিপেরিনের থেরাপিউটিক পোটেনশিয়াল FXTAS আক্রান্ত রোগীরদের সেল-লাইন থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাও করা হয়েছে। তবুও এই ফলাফল কতটা উপযুক্ত তা জানতে অন্যান্য অ্যানিমেল মডেলের উপর এটি ব্যবহার করে আরও যাচাই করা প্রয়োজন।”
ডাঃ অমিত কুমারের পাশাপাশি এই গবেষক দলের অন্যান সদস্যরা হলেন অরুণ কুমার ভার্মা, ইশান খান, সুবোধ কুমার মিশ্র এবং নেহা জৈন। গবেষণাটি ACS কেমিক্যাল নিউরোসায়েন্স নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।