এপ্রিল 23, 2024

নিউমোকক্কাল ইনফেকশন প্রতিরোধী গবেষণায় সফল একদল ভারতীয় বিজ্ঞানী

Dr. Amit Kumar and his colleagues IIT-Indore

Reading Time: 2 minutes

[কলমে- সুন্দররাজ পদ্মনাভন। অনুবাদে- মোনালিসা মহান্ত।]

সম্প্রতি একদল ভরতীয় বিজ্ঞানী স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া নামক রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াটির জিনোমে এ তিনটি নতুন ড্রাগ টার্গেট সাইটের খোঁজ পেলেন। যা নিউমোকক্কাল ডিজিজগুলির চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে একটি অভাবনীয় দ্বার উন্মোচন করবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকের এক অংশ।

বিগত কয়েক বছরের মধ্যেই স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া বেশ কয়েকটি প্রচলিত ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। যা ড্রাগ ডিজাইনকারি গবেষকদের, রোগ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপ্টোকক্কাসের জিনোমে নূতন নূতন কার্যকরী টার্গেট সাইটের খোঁজ করতে উৎসাহিত করে তুলেছিল। বহু বছর ধরে, বিভিন্ন গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে সম্ভাব্য জি-কোয়াড্র্যাপ্লেক্স মোটিফ (PGQs) নামক জিনোম সিকোয়েন্সগুলির একটি সেট বিভিন্ন প্রাণীর জিনোমের নিয়ন্ত্রক অঞ্চলে উপস্থিত রয়েছে এবং তারা জি-কোয়ারড্র্যাপ্লেক্স নামে অনন্য কাঠামো গঠন করে, যা বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করে ডিএনএ প্রতিলিপি, পুনঃসংযোগ এবং জিন এক্সপ্রেশন ইত্যাদি। মূলত তারা যেই জিনে অবস্থান করে, সেই জিনটিকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমেই এমনটা ঘটিয়ে থাকে।

একটি নতুন গবেষণায় ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ইন্দোর) এবং ট্রানসলেশনাল হেলথ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (ফারিদাবাদ) এর কিছু বিজ্ঞানী স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়ায় তিনটি জি-কোয়াড্র্যাপ্লেক্স মোটিফের খোঁজ পেয়েছেন। এই তিনটি জি-কোয়াড্র্যাপ্লেক্স মোটিফ স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জিন যথা – hsdS, recD, and pmrA তে অবস্থিত।

“আমরা আগেই পেয়েছিলাম যে এই ধরনের জি-কোয়াড্র্যাপ্লেক্স মোটিফ বহনকারী জিনগুলো রোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা প্রধানত লক্ষ্য কোষ বা জিন থেকে ড্রাগের অপসারণ এ অংশ নিয়ে বা ড্রাগ লক্ষ্যে যে পরিবর্তনগুলো হয় সেগুলিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। যার ফলে ব্যাক্টেরিয়াটি ড্রাগগুলির বিরুদ্ধে রেসিসটেন্স অর্জন করতে সক্ষম হয়। তবে এখন আমারা অনেকটাই এগিয়ে গেছি। আমাদের সনাক্ত করা জিনোম ক্রমগুলি স্ট্রেপ্টোকোকাস নিউমোনিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য প্রতিশ্রুত লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।” – জানিয়েছেন এই দলের নেতৃত্ব দানকারী গবেষক, আইআইটি ইন্দোরের জীববিজ্ঞান বিভাগের অমিত কুমার।

পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তিনি এবং তার দল একটি ছোট অণুর বিকাশের জন্য কাজ করছে যা জি-কোয়াড্র্যাপ্লেক্স কাঠামো গঠনকারী জিনোমিক সিকোয়েন্সের সাথে সংযুক্ত হতে পারে এবং রোগ সৃষ্টিকারী জিনগুলির বিকাশে বাধা দেয়। আমরা ইতিমধ্যে কিছু খুব আশাবাদী ফলাফল পেয়ছি। কিন্তু, এখনো এর উপর আরো অনেক কাজ করতে হবে।” ডাক্তার অমিত কুমার এবং তার সহকর্মীরা, ট্রানসলেশনাল হেলথ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (THSTI,ফরিদাবাদ) এর ডঃ তরুণকে শর্মার সহযোগীদের সাথে একসাথে এই গবেষণাটি চালান। ‘নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামক একটি বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। ডক্টর অমিত কুমার , তরুন শর্মা, অর্পিতা তিওয়নি, ডক্টর সুবোধ কে. মিশ্র, নেহা জৈন, উমা শঙ্কর প্রমুখেরাও এই গবেষণা রং সাথে যুক্ত ছিলেন।