ডিসেম্বর 24, 2024

করোনা মহামারিতে চমকপ্রদ কম্বাইন্ড মনোক্লোনাল থেরাপি

pexels-photo-3952224 (1)
Reading Time: 7 minutes

প্রিয়াঙ্কা ভদ্র, পিএইচডি, ন্যানোবায়োটেকনোলোজিস্ট জুলাই ৭,২০২১

দেখতে দেখতে প্রায় দেড় বছর অতিক্রম করলো এই কোভিদ মহামারী. ন্যাচারাল ইমিউনিটি ভ্যাকসিন সাইটোকাইন স্টর্ম স্টেরইড প্লাসমা কনভেলেসেন্টথেরাপি আর কিছুই বাকি নেই. কিন্তু ওই যে মানুষ হাল ছাড়বে না. শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাবে এর প্রতিকারের. এ যেন একটা জীবন সংগ্রামভাইরাস আর মানুষের মধ্যের. চার্লস ডারউইন এর” survival of the fittest ” এর মতো. এক দিকে ভাইরাস দিনে দিনে রং বদলাচ্ছে স্ট্রেন বদলাচ্ছে আরোশক্তিশালী হচ্ছে ওদিকে মানুষও তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে.

SARS-CoV2 ভাইরাস আসলে কি? কেন তার দিন দিন এই পরিবর্তন?

SARS-CoV2 ভাইরাস হলো একটি আর এ নে ভাইরাস যার জিনোম টি চার প্রকার স্ট্রাকচারাল প্রোটিন দিয়ে তৈরী. স্পাইক এনভেলপ মেমব্রেন এবংনিউক্লিওক্যাপসিড প্রোটিন. তাছাড়াও কিছু নন স্ট্রাকচারাল আর একসেসারি প্রোটিন থাকে. এই স্পাইক প্রোটিন টি ভাইরাস শরীরের একদম বহির্ভাগে থাকেযেটি মূলত দুটি সাবেউনিট দিয়ে তৈরী এস ১ আর এস ২. এই এস্১ সাবেউনিটের গায়ে লেগে থাকা রিসেপ্টর বাইন্ডিং ডোমেইন এর দাঁড়ায় এটি হোস্ট সেলএর এনজিওটেনসিন কোনভার্টিং এনজাইম এর সাথে যুক্ত হয় এবং এস২ সাবেউনিট টির মধ্যে একটি গঠনগত পরিবর্তন আনে যেটি ভাইরাস টিকে হোস্টসেল মেমব্রেন ফিউশানে সাহায্য করে এবং ভাইরাস এর শরীরে প্রবেশে সহায়তা করে. এই স্পাইক প্রোটিন টাই হচ্ছে যত নষ্টের গোড়া. এটি একটি ডাইমারপ্রোটিন যেটি একটি পুরু লিপিড আস্তরণ এর উপর দুটো একই প্রকৃতির প্রোটিন নিজেদের মধ্যে জুড়ে থেকে হোস্ট সেল এর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য অপেখ্যাকরে. কিন্তু আদোও এই ব্যাপারটা অটো সহজ নয়. সাম্প্রতিক কালে ক্র্যাও ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি দ্বারা এই প্রোটিন টির গঠন সুষ্ঠুভাবে

জানা গেছে এবং সেখান থেকে বোঝা গেছে যে এই প্রোটিন টির চারপাশে একটি শর্করার শৃঙ্খল থাকে যাকে গ্লাইকেন মলিকিউল বলে যেটি প্রোটন টিকেএন্টিবডির সাথে মিলিত হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে। তাই এন্টিবডি ওই সব অঞ্চল ছাড়া বাকি জায়গায় যুক্ত হতে পারে। আর এই গঠনমূলক তথ্যেরভিত্তিতে এন্টিবডি বা ভ্যাকসিন ডিসাইন করা হয়। এই ভাইরাস টির অনেক নতুন স্ট্রেন তৈরী হয়েছে। যার জন্য এখন চতুর্দিকে অনেক মিউট্যান্ট ভার্সান এরউদ্ভব ঘটেছে যেগুলো মূলত স্পাইক প্রোটিন এর জিনগত ত্রুটির ফলেই হয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো D614G মিউটেশন। যেখানেঅরিজিনাল ভাইরাস টির স্পাইক প্রোটিন এ D614 থাকে যেটা প্রুফ রিড এর সময় পরিবর্তিত হয়ে G614 হয়ে গিয়ে মিউট্যান্ট ভার্সন তৈরী করেছে। এ ক্ষেত্রেস্পাইক প্রোটিন এর দুটি সাব ইউনিটের মধ্যে থাকা জানক্সান পয়েন্ট ফিউরিন চ্যানেল টি বেশ ওপেন কনফিগারেশানে থাকে আর ঠিক এই কারণে S1 সাবিউনিটের সাথে হোস্ট সেল এর ACE2 এর মধ্যে সংযোগ অতি সহজেই হতে পারে। ফলস্বরূপ সংক্রমণের হার বৃধ্যি পায়।

রক্ত জমাট বাধা এবং তার প্রতিকার

কিছু গুরুতর অসুস্থ কোভিদ পেশেন্ট দেড় ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায় যদিও তার হার অনেকাংশে কম।এই রক্ত জমাট বাধার জন্য অনেক ক্ষেত্রে কার্ডিয়াক এরেস্ট স্ট্রোক এর মতো ভয়াবহ অবস্থার উত্পত্তি ঘটে। এর থেকে প্রতিকারের জন্য বৈজ্ঞানিক মহলসম্পূর্ণ ভাবে একটি ব্লাড টেস্ট এর প্রক্রিয়া চালু করেছে। যেখানে পেশেন্ট এর কমপ্লিট ব্লাড টাইপিং হবে রক্ত জমাট বাধা সংক্রান্ত সব বিষয়ে জানার জন্য।এই প্রক্রিয়া কে থ্রম্বোএলাসটোগ্রাফি (TEG) বলে যেখানে পেশেন্ট শরীরে কেমন ভাবে রক্ত জমাট বাধে কতক্ষন সময় দরকার রক্ত জমাট বাধার জন্য জমাটরক্ত ঠিক কতটা শক্তিশালী কত সময় দরকার এই রক্ত তঞ্চন কে ভেঙে ফেলার জন্য এরূপ অনেক রকমের ছবি ফুটে ওঠে। এই থ্রম্বোএলাসটোগ্রাফি টেস্টরেজাল্ট করোনা ট্রিটমেন্ট এর একটি অংশ হিসাবে পরিচিত যেখানে রক্তের মধ্যে D ডাইমার লেভেল এর একটি পরিমাপ করা হয়। D ডাইমার হলো একটিপ্রোটিন যেটি রক্ততঞ্চন ভেঙে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে এই প্রোটিন এর মান বেড়ে যাওয়ার ফলে রক্ত জমাটের ভাঙ্গনের মাত্রা টা কে চিহ্নিত করাযায়। এর মান পাঁচশো ন্যানোগ্রাম / মিলিলিটার এর কম থাকলে কোনো উল্লেখযোগ্য ব্লাড ক্লট নেই বলে ধরা হয় অন্য দিকে মান পাঁচশো ন্যানোগ্রাম / মিলিলিটার এর বেশি হলে সে ক্ষেত্রে ধরা হয় উচ্চ মানের ব্লাড ক্লট আছে। এই টেস্ট টির একটি বেনেফিসিয়াল সাইড আছে যেমন এর দ্বারা বোঝা যাবেকোন কোভিদ পেশেন্ট এর এন্টিকোয়াগুলেশান থেরাপি দরকার এই রক্তজমাট সংক্রান্ত কমপ্লিকেশান এর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য. টিস্যু প্লাসমিনোজেনএকটিভেটর হলো এমন এক ধরণের এন্টিকোয়াগুলেন্ট ড্রাগ যেটি এফ ডি এ দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এই ড্রাগ টির প্রয়োগে একটি রান্ডম ক্লিনিকাল ট্রায়াল করাহয়েছে কিছু সংখক কোভিদ পেশেন্ট দেড় উপর রক্ত জমাট বাধা প্রক্রিয়া টাকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং সে ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে এই ড্রাগ টিঅনেকাংশে রেসপিরেটরি কার্যকলাপ কে কন্ট্রোল করে রক্ত জমাট কে প্রতিরোধ করে। বলাবাহুল্য অনেক সময়ে কোভিদ ট্রিটমেন্ট এর জন্য যে সমস্তরিপারপাসড ড্রাগ বা ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয় তার জন্য রক্ত জমাট বাঁধতে দেখা যায় যার ফলস্বরূপ ডিপ ব্রেন থ্রম্বোসিস (DVT), পালমোনারিএম্বোলিজম (PE), দিসসেমিনেটেড ইন্টারভ্যাস্কুলার কোয়াগুলেশান (DIC) এর মতন গুরুতর দশা দেখা যায়

SARS-CoV2 ভাইরাস আর হোস্ট সেল ইমিউন রেসপন্স

ভাইরাস আক্রমণের ফলে শীঘ্রই আমাদের শরীরে এন্টিবডি এর তৎপরতা শুরু হয় এবং সিম্পটমস দেখার দশ দিনের মাথায় শরীরে অনেক নিউট্রালিসিংএন্টিবডি তৈরী হয়। এই নিউট্রালিসিং এন্টিবডির উৎপাদন যত বাড়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পায়। মনোক্লোনাল এন্টিবডি মূলতরিকম্বিনেন্ট ডিএনে টেকনোলজি দ্বারা আর্টিফিসিয়াললি তৈরী করা হয় যেখানে এন্টিবডি টি এন্টিজেন এর নির্দিষ্ট এপিটোপের সাথেই যুক্ত হতে পারে।অন্যথা নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাই কোভিদ রোগী রা সুস্থ হয়ে ওঠার অন্ততপখ্যে পাঁচ সাত মাস পরে তাদের শরীরে প্রচুর পরিমানে এই এন্টিবডি গড়েওঠে রোগ প্রতিরোধের জন্য। গবেষকরা ল্যাবরেটরি তে এক বিশেষ পদ্ধতিতে হোয়াইট ব্লাড সেলস কে সেই নির্দিষ্ট ভাইরাস এন্টিজেন এর বিরুদ্ধে কার্যকরীকরে এবং সে ক্ষেত্রে অনেকগুলো সেলস এর ক্লোন কেও ব্যবহার করা হয় একইপ্রকারের অনেক মনোক্লোনাল এন্টিবডি উৎপাদনের জন্য। এই এন্টিবডি টিপূর্বে এইচ আই ভি বা ইবোলা এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমানে আলোড়ন তুলেছিল কিন্তু সাম্প্রতিক কালে কোভিড 19 এর ক্ষেত্রে এফ ডি এ দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্তজৰুৰীকালীন ( ই ইউ এ ) ব্যবহারের জন্য।

মনোক্লোনাল মনোথেরাপি Vs কম্বাইন্ড মনোক্লোনাল থেরাপি

মনোক্লোনাল মনোথেরাপি তে একটি নির্দিষ্ট মনোক্লোনাল এন্টিবডি দ্বারা ভাইরাস টিকে প্রতিরোধ করা হয় যেখানে এন্টিবডি টি ভাইরাস এন্টিজেন এরস্পাইক প্রোটিনে থাকা একটি নির্দিষ্ট এপিটোপের সাথে যুক্ত হয়। কম্বাইন্ড থেরাপি তে একাধিক ( এ ক্ষেত্রে দুটি) মনোক্লোনাল এন্টিবডি ব্যবহার করা হয়নির্দিষ্ট ভাইরাস এর বিরুদ্ধে কার্যকরী হওয়ার জন্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন মনোক্লোনাল এন্টিবডির মিশ্রণ থাকার জন্য ভাইরাস এন্টিজেন এর সারফেসেরউপর দুটি ভিন্ন এপিটোপের সাথে যুক্ত হতে পারে। ফলস্বরূপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভাইরাস এর স্পাইক প্রোটিনের জেনেটিক মিউটেশনের জন্যঅনেক মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টি হয়েছে যে ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্পাইক প্রোটিনে একাধিক অবস্থানে মিউটেশন ঘটিত জেনেটিক সেক্যুয়েন্স পরিবর্তন দেখাযায়। এই ধরণের মিউটেশন ঘটিত ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রেন এর জন্য এই কম্বাইন্ড থেরাপি বেশ উপাদেয়। এল্লি লিললি কোম্পানি দুটি ভিন্নপ্রকার মনোক্লোনালএন্টিবডি তৈরী করে বামলানিভিমাব এবং এটসেভিম্ব এবং সে ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন মনোক্লোনাল এন্টিবডি থেরাপিও শুরু করে ( মনোথেরাপি এবং কম্বাইন্ডথেরাপি)। 10 th নভেম্বর 2020 তে এফ ডি এ দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পায় এই বামলানিভিমাব মনোক্লোনাল এন্টিবডি মনোথেরাপি। 9 th ফেব্রুয়ারী 2021 এফডি এ কম্বাইন্ড থেরাপি টিকেও অনুমোদন দেয় শুধুমাত্র মাইল্ড থেকে মডারেট পেশেন্ট দেড় জন্য এবং ই এম এ সেই সংক্রান্ত সব নথি সংগ্রহ করতে থাকে।বামলানিভিমাব মনোথেরাপি কার্যকরী না হওয়ার জন্য সেটিকে বাতিল করে দেওয়া হয় এবং এফ ডি এ একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন মনোক্লোনাল এন্টিবডি থেরাপিএর জন্য উপদেশ দেয় যেটি SARS CoV2 ভাইরাস টির সংক্রমণ অনেকাংশে কমাতে পারে। এই কম্বাইন্ড থেরাপি তা খুব শীঘ্রই ফেজ থ্রি ট্রায়াল এ প্রবেশকরবে। যেহেতু বামলানিভিমাব মনোথেরাপি নতুন ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রেন এর বিরুদ্ধে রেসিস্টেন্ট তাই বর্তমানে এটিকে সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেআর একটি কম্বাইন্ড থেরাপি বেশ উল্লেখযোগ্য হয়েছে কাসিরিভিমাব ar ইমডেভিম্যাব। এফ ডি এ এটিকে ই ইউ এ এর জন্য অনুমোদন দিয়েছে সেই সবপেশেন্ট দেড় জন্য যাদের হাসপাতাল এর ট্রিটমেন্টের দরকার নেই এবং সে বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যেমন

১) যে সমস্ত কোভিদ পেশেন্ট দেড় নিউক্লিক অ্যাসিড এমপ্লিফিকেশান টেস্ট (NAAT) রেজাল্ট পসিটিভ হয় সিম্পটমস এর দশ দিন পর তাদের ক্ষেত্রেতৎক্ষণাৎ থেরাপি টি শুরু করতে হবে।

২) যে সমস্ত SARS-CoV2 ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রেন এ E484K মিউটেশন ঘটেছে এবং বামলানিভিমাব মনোথেরাপি কার্যকরী হয় নি সেক্ষেত্রে কাসিরিভিমাব এবংএটসেভিমাব এর কম্বাইন্ড থেরাপি প্রয়োগ করা হবে।

৩) কিছু ল্যাবরেটরি গবেষণায় দেখা গেছে যে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রেন এর ক্ষেত্রে এমন কিছু মিউটেশন ঘটছে যেখানে এই তিন ধরণের মনোক্লোনালএন্টিবডি এর মনোথেরাপি বা কম্বাইন্ড থেরাপি কার্যক্ষমতা ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে পরিবর্তন ঘটছে।

ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা তে B117 ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রেন টি এই মনোক্লোনাল এন্টিবডি দ্বারা যথেষ্ট পসিটিভ রেসপন্স দিয়েছে এবং সেটি ই ইউ এ এরমাধ্যমে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আর একটি স্ট্রেন B1351 যার মধ্যে E484K মিউটেশন দেখা যায় যেটি আবার বামলানিভিমাব দ্বারা যথেষ্ট প্রতিরোধিত ( ল্যাবরেটরি দ্বারা গবেষণারত) সেই একই স্ট্রেন টির উপর বামলানিভিমাব এবং এটসেভিমাব এর কম্বাইন্ড এফেক্ট কার্যকরী আরো বেশি প্রভাবশীল। সম্ভবতE484K এর সাথে K417N মিউটেশন টিরো উল্লেখ পাওয়া গেছে এই একই স্ট্রেনে যেখানে কাসিরিভিমাব এর কার্যক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে কিন্তু কাসিরিভিমাবএবং indevimab কম্বাইন্ড ইফেক্ট টি বেশ কার্যকরী। B1427 / B1429 ভ্যারিয়েন্ট টিও যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য মার্কিন মুলুকের কিছু নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলেযেমন ক্যালিফোর্নিয়া এরিজোনা এবং নেভাদা। এ ক্ষেত্রে যে মিউটেশন টি ঘটে L452R সেটির উপর বামলানিভিমাব এর মনোথেরাপি বেশ কার্যশীল কিন্তুকম্বাইন্ড ইফেক্ট টির কার্যক্ষমতা যথেষ্ট কম।

পপুলেশন বেসড জেনোমিক সার্ভিলেন্স এর ভিত্তিতে এই সার্কুলেটিং ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাল স্ট্রেন গুলোর ভৌগোলিক অবস্থানের সাথে কি সম্পর্ক সেগুলোরএকটা অনুমান করার চেষ্টা করা হচ্ছে এমনকি এই ভ্যারিয়েন্ট গুলোর জন্য নির্দিষ্ট মনোক্লোনাল এন্টিবডি এর মনোথেরাপি বা কম্বাইন্ড থেরাপি এরকার্যক্ষমতা এর উপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে এই এন্টিবডির কি নির্দিষ্ট কার্যক্ষমতা ওই নির্দিষ্ট মিউটেশন ঘটিত স্ট্রেন এর উপর তা জানা সম্ভব হবে। ভ্যাকসিনথেরাপি সঠিকভাবে কার্যশীল না হলে সে ক্ষেত্রে মনোক্লোনাল এন্টিবডি থেরাপি কার্যকরী হয়।

এ বিষয়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ভিন্ন মত পোষণ করেছেন যেমন ডেনিস বার্টন , স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর গবেষক ওনার মতে মনোক্লোনাল এন্টিবডিসকলের জন্যই জরুরি কারণ বয়স্কালে ভ্যাকসিন সঠিক ভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সখ্যম নয় কারণ সে ক্ষেত্রে মেমরি বি সেলস কার্যক্ষমতাকমিয়ে ফেলে তাই এমনোবস্থায় মনোক্লোনাল এন্টিবডির জুড়ি মেলা ভার। তাছাড়া ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে পলিক্লোনাল এন্টিবডির ব্যবহৃত হয় যেখানেএন্টিবডি টি স্পাইক প্রোটিন এর বিশেষ অংশ ছাড়া অন্য জায়গাতেও যুক্ত হতে পারে যেখানে এফিক্যাসি রেট কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তুমনোক্লোনাল এন্টিবডির সংযোগ স্পাইক প্রোটিন এর নির্দিষ্ট এপিটোপের সাথেই ঘটে। ফলস্বরূপ এফিক্যাসি রেট বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আরো বেশি মূলতবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে। উপরন্তু এই কম্বাইন্ড থেরাপি বা ককটেল ভ্যাকসিন থেরাপি আরো কার্যকরী হওয়া উচিত যে ক্ষেত্রে উক্ত ভাইরাস টির স্পাইক প্রোটিনএর একাধিক অংশে মিউটেশন ঘটেছে। এন্টিবডি মলিকিউলস এর এফ সি রিজিওন ভাইরাস এর এন্টিজেন এর সাথে যুক্ত হয়। এই রিজিওন এর মধ্যে এনটার্মিনাল গ্লাইকোসাইলেশান বলে একটি প্রক্রিয়া হয় যার ফলে এন্টিবডি ডিপেন্ডেন্ট সেল সাইটোটক্সিসিটি (ADCC) হয়। এখন এই এফ সি রিজিওন এরজেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারিং এর দরুন এই ADCC একটিভিটি কি বেড়ে যাই SARS CoV2 ভাইরাস এর ক্ষেত্রে তাই এখানে এই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত একটিভিটি ঠিককিভাবে ভাইরাস টির বিরুদ্ধে কাজ করে আপাতত জানা সম্ভব হয় নি।

১) এই এন্টি SARS-Cov2 মনোক্লোনাল এন্টিবডি টি ইন্ট্রাভেনাস ইনফিউশান দ্বারা শরীরে প্রবেশ করানো হয় এবং এক ঘন্টার জন্য পেশেন্ট টিকে তারশরীরের অবস্থার পরজনাবেক্ষন করা হয়।

২) ফেজ টু ( ব্লেজ ওয়ান ) ট্রায়াল এ বামলানিভিমাব এর দ্বারা প্রাপ্ত পার্শপ্রতিক্রিয়া হলো নৌশিয়া, ডায়ারিয়া, ডিজিনেস, হেডেক, প্রুড়িটিস এবং ভমিটিং

৩) ই ইউ এ ফ্যাক্ট শিট এর উপর নির্ভর করে দেখা গেছে যে বামলানিভিমাব এবং এটসেভিমাব এর কম্বাইন্ড এফেক্ট টিও সেইসব একই প্রকার পার্শপ্রতিক্রিয়াঘটায়। শুধুমাত্র ১% এর ক্ষেত্রে হাইপারসেন্সিটিভিটি দেখা যায়

৪) হাইপেরসেন্সিটিভিটি রিঅ্যাকশন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইনফিউশন এবং এনাফাইলেক্সিস যদিও এটির মান খুবই কম ১% এরও কম। সেক্ষেত্রেএপিনেফ্রিন প্রয়োগ করা হয়।

৫) মনোক্লোনাল এন্টিবডি ক্ষেত্রে ইমিউন রেস্পন্স যাতে কোনোভাবেই ভ্যাকসিন সংক্রান্ত ইমিউন রেস্পন্সের সাথে ওভারল্যাপ না করে মনোক্লোনালএন্টিবডি এর ট্রিটমেন্ট এর নব্বই দিন পরে ভ্যাকসিন নেওয়া যেতে পারে।

৬) মনোক্লোনাল এন্টিবডি অথবা বামলানিভিমাব এবং এটসেভিমাব এর ককটেল ভার্সন অথবা কাসিরিভিমাব এবং ইমডেভিম্যাব এর ককটেল ভার্সন এরপ্লাসেন্টা অতিক্রম করার কোনো লিখিত তথ্য পাওয়া যাই নি কিন্তু এর সম্পূর্ণ সম্ভাবনা আছে অতিক্রম করার তাই গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি কতটাসুরোখ্যনীয় সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।

৭) শিশুদের ক্ষেত্রেও কোনো ট্রায়াল ভার্সন চালু করা হয়নি আপাতত তাই সেক্ষেত্রে এর কতটা প্রভাব তা এখনই বলা সম্ভবপর নয়

৮) এফ ডি এ ই ইউ এ এর উপর ভিত্তি করে এটুকুই বলা সম্ভব যে নন হস্পিটালাইস্ড প্রাপ্তবয়স্করা যাদের শরীরের ওজন চল্লিশ কেজি এর বেশি তারাই এইমনোক্লোনাল মনোথেরাপি বা ককটেল ভ্যাকসিন নিতে সামর্থ।

৯) হাই রিস্ক ইন্ডিভিজুয়াল যারা ই ইউ এ এর আওতায় পরে তাদের মধ্যে অন্ততপক্ষয়ে একটি ক্রাইটেরিয়া থাকলেই তাদের কে হাই রিস্ক জোনে ফেলা হবে।

  • বডি মাস ইনডেক্স (বি এম আই ) ≥ পঁয়ত্রিশ
  • ক্রনিক কিডনি ডিজিজ
  • ডায়াবেটিস মেলাইটাস
  • ইমিউনোকম্প্রোমাইজিঙ কন্ডিশান
  • কারেন্টলি রিসিভিং ইমিউনোসাপ্রেসিভ ট্রিটমেন্ট
  • এজেড ≥ পঁয়ষট্টি বছর
  • এজেড ≥ পঞ্চান্ন বছর এবং তার ঊর্ধ্যে
  • কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ
  • হাইপারটেনশন
  • ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ
  • ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ
  • বারো থেকে সতেরো বছর বয়সের মধ্যে
  • সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন গ্রোথ চার্টের ভিত্তিতে বডি মাস ইনডেক্স (বি এম আই ) ≥ পঁচাশি পার্সেন্টাইল বয়স এবং লিঙ্গঅনুযায়ী
  • সিকেল সেল ডিজিজ
  • কনজেনিটাল অর একোয়ার্ড হার্ট ডিজিজ
  • নিউরোডেভেলোপমেন্টাল ডিসর্ডার (সেরিব্রাল পালসি )
  • মেডিকেল অন্যর্ভুক্ত টেকনোলোজিক্যাল ডিপেন্ডেন্স ( ট্রাকিওস্টমি, গ্যাস্ট্রোষ্টমী, পসিটিভ প্রেসার ভেন্টিলেশন)
  • অস্থ্যমা অর রিএক্টিভ এয়ারওয়ে
  • অন্য ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ যার কন্ট্রোল এর জন্য নিত্য মেডিসিন দরকার

Subscribe YouTube Channel

তথ্যসূত্র:

https://www.nature.com/articles/s41587-020-0732-8

https://www.covid19treatmentguidelines.nih.gov/anti-sars-cov-2-antibody-products/anti-sars-cov-2-monoclonal-antibodies/